জানেন কি আপনার সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মিশে? - Official Masum

Breaking

Friday, December 24, 2021

জানেন কি আপনার সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মিশে?

    • রেজানুর রহমান

 

আজকের লেখাটি অনেকের কাছেই প্রেরণার উৎস হতে পারে ভেবে সাহস করেই লিখছি। তবে আমার লেখা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো লেখার বিষয়বস্তু। একটি ছোট্ট মেয়ে, নাম লারিসা রোজান। বয়স মাত্র ১০ বছর। সে সমুদ্র পাড়ি দিতে বাংলা চ্যানেলে নেমেছিল।


একটানা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সাথে লড়াই করে সাঁতার কেটেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় লারিসাকে অনেকটা জোর করেই রেসকিউ বোটে উঠিয়ে নেওয়া হয়। বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার লড়াইয়ে ছোট্ট লারিসার সাথে সহযোগী হিসেবে ছিলেন বাবা ভ্রমণবিদ আক্তারুজ্জামান ও লারিসার চেয়ে বয়সে তিন বছরের বড় ভাই আরবিন। বাবার সাথে দুই ভাই-বোন সমান তালে সাঁতার কেটে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় প্রথমে আরবিনকে রেসকিউ বোটে তুলে নেওয়া হয়। লারিসা রেসকিউ বোটে উঠতে রাজি হচ্ছিল না। সাঁতার সহযোগী বাবা আখতারুজ্জামান মেয়েকে বার বার অনুরোধ করছিলেন, ‘সমুদ্র অনেক বেশি উত্তাল হয়ে উঠেছে। চলো এবারের মতো সাঁতার শেষ করি। পরের বছর না হয়...’ বাবার কথা শুনে সমুদ্রের বিশাল ঢেউয়ে হাবুডুবু খেয়েও সাঁতরে যাচ্ছিল লারিসা। বাবাকে অনেকটা নির্দেশের সুরে বলেছিল, কথা বলো না। সামনে তাকাও। সাঁতরাতে থাকো... পরে অনেকটা জোর করে লারিসাকে রেসকিউ বোটে উঠিয়ে নেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে সমুদ্রে লারিসার সাঁতার সংগ্রামের রুদ্ধশ্বাসপূর্ণ দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছি। সামান্য পুকুরের পানিতে নামতে আমাদের কিশোর বয়সী ছেলে-মেয়েরা কী যে ভয় পায় তা সবাই জানি। আর সেখানে উত্তাল সমুদ্রে সাঁতারে নেমেছিল লারিসা। সমুদ্রের বিশাল বিশাল ঢেউ তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে। বিশাল ঢেউয়ে ছোট্ট লারিসা মাঝে মাঝেই হারিয়ে যাচ্ছিল। পাশেই যাচ্ছিল রেসকিউ বোট। বোটে বসেছিলেন লারিসার মাসহ আরও কয়েকজন উদ্ধারকর্মী। লারিসার জন্য তাদের ভয় হচ্ছিল। পাছে না লারিসা সমুদ্রের ঢেউয়ে হারিয়ে যায় এই আশঙ্কায় মায়ের বুক কেঁপে উঠছিল বার-বার। কিন্তু ছোট্ট লারিসা ছিল নির্ভার। সমুদ্রের বিশাল ঢেউয়ের সাথে লড়াই করেই সে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। দুর্ভাগ্য, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে পারেনি লারিসা। 

একটানা  প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সমুদ্রে সাঁতার কেটেছে সে। প্রচার মাধ্যমে সে বলেছে, ‘এবার পারলাম না। পরের বার আশা করি পারব।’ আমাদের বিশ্বাস লারিসা পারবে। শুধু বাংলা চ্যানেল নয় আরও অনেক বিস্ময়কর অর্জন তার জন্য অপেক্ষা করছে বলে আমার ধারণা।

No comments:

Post a Comment